শহিদুল ইসলাম, প্রতিবেদক।
ঐতিহাসিক কালুরঘাট সেতু নির্মাণকাজের উদ্বোধন উপলক্ষে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে দীর্ঘদিন ধরে এই দাবিতে আন্দোলনকারী সংগঠন চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেনের পক্ষে সংগঠনের মহাসচিব মো: কামাল উদ্দিন লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন। নাগরিক ফোরাম মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুসকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং একইসাথে সেতু নির্মাণ ২০২৮ সালের মধ্যে সুনিশ্চিত করতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনা উত্থাপন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কালুরঘাট সেতু চট্টগ্রামের দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগের একমাত্র প্রবেশদ্বার হিসেবে যুগ যুগ ধরে মানুষের ভোগান্তির প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এই সেতুর আধুনিকায়নের দাবিতে প্রথম আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল ১৯৮৮ সালে বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়নেব জন্য এস. এম. জামাল উদ্দিন ও ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে।
এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন, স্মারকলিপি প্রদান, মানববন্ধন, গণঅনশন, গোলটেবিল বৈঠক এবং একাধিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরাম ও অন্যান্য সংগঠন এই দাবিকে জাতীয় ইস্যুতে পরিণত করে। নাগরিক ফোরাম আরো বলে, “বিগত সরকার আমাদের আন্দোলনকে সরকার বিরোধী বলে আখ্যা দিলেও আমরা থেমে থাকিনি। আমরা চট্টগ্রামের মানুষের পক্ষ থেকে বলেছি-এই সেতু শুধু একটি অবকাঠামো নয়, এটি দক্ষিণ চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক মুক্তির চাবিকাঠি॥
মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এর হাতে কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শুধু একটি সেতুর সূচনা নয় বরং চট্টগ্রামের সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেয়ার বার্তা বহন করে। আমরা তাঁকে জানাচ্ছি হৃদয় নিংড়ানো অভিনন্দন। সাবেক দুই এমপি মইনুদ্দিন খান বাদল ও মোসলেম উদ্দিন আহমেদ এবং যাঁরা চট্টগ্রামের কালুরঘাট নতুন সেতুর বাস্তবায়নের জন্য সোচ্চার হয়েছেন তাঁদের সবাইকে অভিনন্দন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা নেয়ার পর থেকে এ সেতুর বাস্তবায়ন নিশ্চিত ও ত্বরান্বিত করতে গত বছর চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরাম স্মারকলিপি লিপি প্রদান সহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়। বিগত সরকারী দলের অনেক নেতা নাগরিক ফোরামের আন্দোলনকে সরকার বিরোধী আন্দোলন হিসেবে আখ্যায়িত করলেও এটি থেমে থাকেনি। আগামী ১৫ মে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা এ প্রকল্পের উদ্বোধন করার পর এর দ্রুত বাস্তবায়ন ২০২৮ সালের মধ্যে হোক এ প্রত্যাশা করে নাগরিক ফোরাম।
প্রস্তাবনায় বলা হয়, ৭০০ মিটার দৈর্ঘ্যের প্রস্তাবিত কালুরঘাট সেতু পদ্মা সেতুর তুলনায় অনেক ছোট, যা মাত্র ৮ ভাগেরও কম দৈর্ঘ্যের। পদ্মা সেতু যেখানে ৮ বছরে নির্মিত হয়েছে, সেখানে কালুরঘাট সেতু চাইলে ২০২৮ সালের মধ্যেই শেষ করা সম্ভব। এজন্য প্রধান উপদেষ্টার সরাসরি তদারকি কামনা করে নাগরিক ফোরাম। কোন ধরনের কালক্ষেপণ বা অবহেলা হলে চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরাম আবারো জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে নামবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রামের ইতিহাস গবেষক সোহেল মোহাম্মদ ফখরুদ দ্বীন, সাংবাদিক কামরুল ইসলাম, লায়ন আসিফ আহমেদ মিদা, একে এম ওসমান গনি, মাষ্টার আবুল হোসেন, সেলিম উল্লাহ চৌধুরী, মোহাম্মদ আকতার হোসেন নিজামী, লায়ন দুলাল কান্তি বড়ুয়া, লায়ন সমীরণ বড়ুয়া ও মোহাম্মদ নুর প্রমুখ।